স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক চ্যানেল নিউজ : মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরো ১১ সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াল ১০৬ জনে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের কারণে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে এ পর্যন্ত ১০৬ জন বিজিপি সদস্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।বিজিবি সদস্যরা তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়।
এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, মিয়ানমারের ১৪ সদস্যকে আশ্রয় নিতে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের পর আটক করা হয়েছে এবং কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
শরিফুল ইসলাম জানান, রোববার সকাল থেকে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড ফোর্সের (বিজিপি) সদস্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যের সংখ্যা ছিল ৩৯ জন, রাত ৮টা পর্যন্ত এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৮ জনে এবং রাত ৮টার পর আরো ৩৮ জন এসেছেন।
তিনি বলেন, এছাড়া রোববার আহত ১৫ বিজিপি সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাখাইন জাতিগত সংখ্যালঘু আন্দোলনের সুপ্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত সামরিক শাখা আরাকান আর্মি, যা মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসন চায়।
এটি সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর একটি সদস্য। এরা সম্প্রতি মিয়ানমারের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কৌশলগত অঞ্চল হিসেবে অর্জন করেছে। মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সাথে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে একত্রে কাজ করে এটি ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর চীন সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে একটি সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই অভিযান মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জোটের বরাত দিয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, তারা ২৫০টিরও বেশি সামরিক চৌকি, পাঁচটি সরকারি সীমান্ত ক্রসিং এবং চীন সীমান্তের কাছে একটি বড় শহরসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নিয়েছে।
রাখাইনে ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নৃশংস বিদ্রোহ দমন অভিযানের ফলে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। রাখাইন পুরোনো নাম আরাকান নামেও পরিচিত।
সূত্র : ইউএনবি